1. masudkhan89@yahoo.com : admin :
  2. banglarmukhbd24@gmail.com : News Editor : News Editor
শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৯ অপরাহ্ন

‘চব্বিশের আগস্টের আগে ও পরে একই অবস্থা চলছে’

সাংবাদিক
  • আপডেট সময় : বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৮ বার সংবাদ দেখেছেন

বাংলা রিপোর্ট//আজ ১০ ডিসেম্বর, বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। মানবাধিকার দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ভিত্তি হোক মানবাধিকার’। এ উপলক্ষে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন মানববন্ধন, আলোচনা সভা ও সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এই দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা বাণী দিয়েছেন।

বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংরক্ষণ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর ‘মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র’ গ্রহণ করে। এতে জন্মস্থান, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বিশ্বাস, আর্থিক অবস্থা কিংবা শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্বিশেষে সব মানুষের জন্য মানবাধিকারের সমতা ও সর্বজনীনতা নিশ্চিত করা হয়। ঘোষণাপত্রে প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার এবং রাষ্ট্রের দায়-দায়িত্ব স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই ঐতিহাসিক দিনটি প্রতিবছর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

মব ভায়োলেন্স ও মিথ্যা মামলায় হয়রানি

বাংলাদেশে বর্তমানে মানবাধিকার পরিস্থিতি কেমন প্রশ্নে মানবাধিকার কর্মী ও গুম-সংক্রান্ত কমিশনের সদস্য নূর খান বলেছেন, ‘‘আগের সরকারের সময় গুম ও ক্রসফায়ারের ঘটনা ব্যাপকভাবে ঘটেছে। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর দেশে ‘গুম’ এবং ‘ক্রসফায়ার’-এর ঘটনা না থাকলেও মানবাধিকার লঙ্ঘন পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।’’ তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে মব ভায়োলেন্স ও মিথ্যা মামলায় সাধারণ নাগরিকদের হয়রানি এবং রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে, যা মানবাধিকারের জন্য উদ্বেগজনক।’’

নূর খান লিটন আরও বলেন, ‘‘এসব ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়। যদি কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হতো, তাহলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাত্রা অনেকটাই কমে যেতো।’’ তার মতে, মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হলে সুষ্ঠু বিচার অপরিহার্য। সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত হলে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের কাছে কঠোর বার্তা যাবে এবং দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির বাস্তব উন্নতি ঘটবে।

মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মী খুশী কবির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘চব্বিশের ৫ আগস্টের আগে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, সেটাতে আমরা মানবাধিকারকর্মীরা সবাই উদ্বেগ প্রকাশ করে বক্তব্য রেখেছি। ৫ আগস্টের পরেও একই অবস্থা চলছে। এ থেকে বের হবার জন্য একটা পরিবর্তন আসছিল চব্বিশ সালে। পরিবর্তন আসছিল যে শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন চেয়েছে। দলের পরিবর্তন হয়েছে, যারা শাসক ছিল তাদের পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু ব্যবস্থার পরিবর্তন হয়নি। একইভাবে জবাবদিহি নাই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা নাই। স্বচ্ছতা নাই। মানবাধিকার যে নিশ্চিত হবে—সেটারও কোনও ব্যবস্থা নাই। আমি দেখছি না। শুধু শাসক পরিবর্তন হয়েছে। যদি আসল গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আসে, তাহলেই কেবল মানবাধিকার নিশ্চিত হবে।’’

মানবাধিকারকে বিশ্বাসে রূপ দেওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তার বাণীতে তিনি মানবাধিকারকে বিশ্বাসের একটি অপরিহার্য অংশ হিসেবে লালন করার আহ্বান জানান, যাতে প্রতিটি মানুষ বৈষম্যহীনভাবে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমরা আমাদের জাতীয় মানবাধিকার কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করতে আন্তর্জাতিক অংশীদার ও জাতিসংঘের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে কাজ করছি এবং বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে সকল আন্তর্জাতিক অংশীদারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘মানবাধিকার দিবস-২০২৫ উপলক্ষে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের পক্ষ থেকে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র এবং জাতিসংঘ সনদে অন্তর্ভুক্ত সব মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা রক্ষায় দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হচ্ছে।’’

বাণীতে তিনি উল্লেখ করেন, দেশের তরুণদের নেতৃত্বে পরিচালিত ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রায় দেড় বছর পর এমন একটি সময়ে এবারের মানবাধিকার দিবস পালিত হচ্ছে, যখন দেশ একটি নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘‘চব্বিশের জুলাইয়ে দেশের সর্বস্তরের মানুষ নিপীড়ন ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটায়। এর মধ্য দিয়েই জনগণের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয় এবং একটি ‘নতুন বাংলাদেশে’র সূচনা হয়।’’

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, ‘‘আজ আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, বাংলাদেশ মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের ৯টি মূল আন্তর্জাতিক চুক্তির সবগুলোতে যোগ দিয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ হলো ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য প্রোটেকশন অব অল পারসন্স ফ্রম এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স’। পাশাপাশি আমরা নির্যাতনবিরোধী কনভেনশনের ঐচ্ছিক প্রোটোকল এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সব মূল কনভেনশনেও সই করেছি।’’

তিনি বলেন, ‘‘জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সুরক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। সংঘাত, মানবিক সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে বাংলাদেশ।’’

১৫ দফা দাবি আইন ও সালিশ কেন্দ্রের

মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) সরকারের কাছে ১৫ দফা দাবি জানিয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—রাষ্ট্রীয় বাহিনী দ্বারা সংঘটিত সকল ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত এবং এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ। তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দ্রুত বিচার ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ এ শেয়ার করুন

একই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২১ বাংলার মুখ বিডি
ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট @ ইজি আইটি সল্যুশন