আন্তর্জাতিক ডেস্ক//আবারও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিষোদ্গার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত ত্রিশ বছরে সব মার্কিন প্রেসিডেন্টকে পুতিন ঘোল খাওয়ালেও এবার ব্যর্থ হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ খবর জানিয়েছে।
পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো প্রধান মার্ক রুট্টের সঙ্গে ওভাল অফিসে সোমবার (১৪ জুলাই) আলাপের সময় তিনি বলেন, পুতিন যে অনেক মানুষকে বোকা বানিয়েছে, সেটা বহু বছর ধরেই প্রমাণিত। তিনি বিল ক্লিনটন, জর্জ বুশ, বারাক ওবামা, জো বাইডেন সবাইকে বোকা বানালেও আমাকে পারেননি।
ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে পুতিনের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে ক্ষেপে গেছেন ট্রাম্প। রুশ প্রেসিডেন্টের ওপর হতাশ হয়েছেন উল্লেখ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, দুমাস আগেই ইউক্রেন নিয়ে একটা চুক্তি হয়ে যাবে আশা করেছিলাম। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী ৫০ দিনের মধ্যে একটা দফারফা না হলে মস্কোর ওপর শুল্ক প্রয়োগ করা হবে।
৫০ দিনের মধ্যে চুক্তিতে সম্মত না হলে কঠোরতর নিষেধাজ্ঞা আসছে হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।
কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার সাফাই গেয়ে তিনি বলেছেন, অনেক সময় কেবল শুকনো কথা চিড়ে ভেজে না। আমি আশা করবো, তিনি বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নেবেন। কেননা রাশিয়া অপার সম্ভাবনাময় একটা দেশ।
যুদ্ধের জন্য আবারও সাবেক প্রেসিডেন্টকে দায়ী করে তিনি বলেন, এটা আমার যুদ্ধ না, বাইডেনের যুদ্ধ। আমি সবাইকে এই সংকট থেকে বের করে আনতে চাই।
ওই বৈঠকে ট্রাম্প ও রুট্টে একটি চুক্তি ঘোষণা করেন, যাতে ন্যাটো দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনে ইউক্রেনকে পাঠাবে। এর মধ্যে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে।
জার্মানি, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুইডেন এবং যুক্তরাজ্য এই অস্ত্র ক্রয় ও সহায়তা উদ্যোগে অংশ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন ন্যাটো প্রধান।
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ট্রাম্প প্রথমদিকে পুতিনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করেন। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনও কোনও অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। এদিকে, ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউজে তুলোধুনো করার পর কিয়েভকে বিকিয়ে দেওয়া নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয় ইউক্রেনের মিত্রদের মধ্যে।
তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্পের ধৈর্য ফুরিয়ে গেছে, কারণ পুতিন শান্তি আলোচনা না করে বরং ইউক্রেনের ওপর রেকর্ড সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছেন। পাল্টা হিসেবে ইউক্রেনও রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে এবং মস্কো-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে হামলা জোরদার করেছে।