1. masudkhan89@yahoo.com : admin :
  2. banglarmukhbd24@gmail.com : News Editor : News Editor
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৫:১২ অপরাহ্ন

নৌকার ট্রাম্প কার্ড রুপন আতঙ্কে সাদিকপন্থিরা

বরিশাল প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ৯ জুন, ২০২৩
  • ১২ বার সংবাদ দেখেছেন
নৌকার ট্রাম্প কার্ড রুপন আতঙ্কে সাদিকপন্থিরা
নৌকার ট্রাম্প কার্ড রুপন আতঙ্কে সাদিকপন্থিরা

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কামরুল আহসান রুপনের প্রতীক ‘ঘড়ি’ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। নৌকা প্রতীকের জয়ে ঘড়ি ট্রাম্প কার্ড হিসাবে আবির্ভাব হতে যাচ্ছে।

রুপন বিএনপি সমথর্কদের ভোটে জয়ের আশা করছেন। লাঙ্গল ও হাতপাখারও টার্গেট বিএনপির ভোট। রুপনের পাশাপাশি হাতপাখা ও লাঙ্গল যদি বিএনপির ভোটে ভাগ বসাতে পারে, তাহলে নৌকার জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়।

এদিকে নির্বাচনি মাঠে হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ করছেন মেয়র সাদিকপন্থি আওয়ামী লীগ নেতারা।

ঘড়ির ভোট যত বাড়বে, নৌকার জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা তত বাড়বে। বরিশালে এখন এটাই আলোচনার বিষয়। ঘড়ি প্রতীকে মেয়র পদে লড়ছেন সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কামালের ছেলে কামরুল আহসান রুপন।

তার ভোটযুদ্ধে থাকাটা নৌকার জন্য খুবই জরুরি। অবশ্য রুপনও মাঠ ছাড়ছেন না। জোরেশোরেই তার প্রচার-প্রচারণা চলছে। বিষয়টি বিএনপি নেতারা ভালো চোখে না দেখলেও নৌকার প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের অনুসারীরা খোশমেজাজে আছেন। রুপন মাঠে থাকায় নৌকার জয়ের পাল্লা ভারী হচ্ছে বলেও তাদের অভিমত।

অনেকটা আকস্মিকভাবে মেয়র পদে রুপন স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। শুরুর দিকে প্রচার চালানো হয়-তিনি বিএনপির ছায়া প্রার্থী। তবে শেষ পর্যন্ত তা টেকেনি। তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বিএনপি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু বলেন, রুপন একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ছিলেন তিনি।

তার প্রচারে বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কামালের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। তার পোস্টার-লিফলেটেও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের কথা বলা হচ্ছে। দল নির্বাচন বর্জন করায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিভিন্ন নির্বাচন নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা ‘ইমেজ অ্যান্ড ইনফরমেশন’-এর নির্বাহী পরিচালক হাসান রেজা বলেন, নির্বাচনি মাঠে রুপন থাকার লাভ ঘরে তুলবে নৌকা-এটাই স্বাভাবিক।

নির্বাচনের ইতিহাস প্রমাণ করে-এখানে বিএনপির শক্তিশালী ভোটব্যাংক রয়েছে। ২০০৩ সালের নির্বাচনে বিএনপির ঐক্যবদ্ধ ভোট ছিল ৭৪ হাজার। আর আওয়ামী লীগের ভোট ছিল ৩৭ হাজার।

২০০৮ সালে প্রায় ৪১ হাজার ভোট পাওয়া আওয়ামী লীগ প্রার্থী ৫৮৮ ভোটের ব্যবধানে জিতলেও বিএনপির সম্মিলিত ভোট ছিল ৯৪ হাজারের বেশি। এমনকি ২০১৩ সালের শওকত হোসেন হিরনের মতো শক্ত প্রার্থীও ১৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যান বিএনপির আহসান হাবিব কামালের কাছে। নিরপেক্ষ নির্বাচনে এখানে কাস্টিং ভোটের শতকরা ৬০ ভাগ পায় বিএনপি।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বিএনপির একাধিক নেতা জানান, রুপনের ভুলে নৌকার ফলাফল ইতিবাচক হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, রুপনের বাবা আহসান হাবিব কামাল দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে দুবার মেয়র পদে নির্বাচন করে হেরেছিলেন।

২০০৩ সালে তার প্রাপ্ত ভোট ছিল ১৮ হাজার। ২০০৮ সালে তিনি ২৭ হাজার ভোট পান। তবে ২০১৩ সালের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসাবে তিনি জেতেন। কামালের নিজস্ব ভোট ছিল সর্বোচ্চ ২৭ হাজার।

ছেলে হিসাবে রুপন এ ভোট পেলে তার জয়ের সম্ভাবনা নেই। কেননা জিততে হলে কমপক্ষে ৫০ হাজার ভোট পেতে হবে। অবশ্য ২৭ হাজার ভোট রুপন পেলে লাভ হবে নৌকার।

বিএনপির ভোটে ভাগ বসাবে লাঙ্গলের তাপস এবং হাতপাখার ফয়জুল। বিএনপির ভোট তিন ভাগ হলে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে নৌকার খোকনের। এছাড়া দলীয় নির্দেশ মেনে বিএনপির ভোটারদের একটি অংশ কেন্দ্রে যাবে না। এতে সবদিক দিয়ে খোকন লাভবান হবেন।

মাঠের এমন পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে নৌকার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর আমিন উদ্দিন মোহন বলেন, গত কয়েক বছরে বরিশালে কোনো উন্নয়ন হয়নি। তাই খোকনকে পেয়ে নগরবাসী উজ্জীবিত। অন্য কে প্রার্থী আর কে প্রার্থী নন-সেটা কোনো বিষয় নয়। উন্নয়নের স্বার্থে বিএনপির ভোটাররাও এবার নৌকায় ভোট দেবে বলে আমার বিশ্বাস।

এদিকে রাজনীতির মাঠে কেবল কোণঠাসা হয়ে থাকাই নয়, গ্রেফতার আর হয়রানি আতঙ্কে ভুগছেন মেয়র সাদিক অনুসারীরা। এক মাস ধরে জেলে আছেন মহানগর ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক আহ্বায়ক রইস আহম্মেদ মান্নাসহ সাদিক অনুসারী ১০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী।

সাদিকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অন্যরাও গ্রেফতার আতঙ্কে আছেন। ১৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব হোসেন খান বলেন, নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আমার সঙ্গেও প্রশাসনের লোকজন এমন আচরণ করছেন। অথচ শুরু থেকেই আমি নৌকার পক্ষে কাজ করছি।

একই অভিযোগ করে ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত বলেন, নৌকার বিপক্ষে আমি কিছু করেছি-এটা কেউ প্রমাণ দেখাতে পারলে আমি শাস্তি মাথা পেতে নেব।

বিসিসির প্যানেল মেয়র, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, যা করা হচ্ছে, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। অথচ প্রকাশ্যে কাজ করছি নৌকার পক্ষে। এসব যারা করাচ্ছেন, তারা সত্যিকার অর্থে নৌকার ভালো চান কি না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

প্রসঙ্গত, বরিশালের ভোটের মাঠে শুরু থেকে আওয়ামী লীগ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে আছে। নৌকার প্রার্থী খোকনের সঙ্গে আছেন সাদিকবিরোধীরা। আর সাদিক অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ-ভেতরে ভেতরে তারা নৌকার বিপক্ষে কাজ করছেন।

সামাজিক যোগাযোগ এ শেয়ার করুন

একই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২১ বাংলার মুখ বিডি
ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট @ ইজি আইটি সল্যুশন